ছবি: এ এইচ এম কামাল
কবিতা ছেড়ে গেছে আমায় চারিদিকে কেবলই এক ভয় আতঙ্ক- সময়ের চোরাবালিতে ঘুরপাক সবার; কবিরা তবু পূর্ণ প্রাণশক্তি ঢেলে লিখছে কবিতা, জীবনের গান ধুন্ধুমার। অথচ ভালোলাগা প্রিয় কবিতায় এখন- কেন যেন কোনই টান নেই আমার; দূরে বহুদূরে নির্বাসনে চলে গেছে সে আজ। শেষ দেখা হয়েছিল যখন যদিও সব মনে নেই- তবু মনে পড়ে খুব করে কেঁদেছিল সে; চিরচেনা ভালোলাগা হাসি ছিল না তার ছিল না পাহাড়, নদী, নীল আকাশ উদার; কষ্টের কালো দাগে ছিল আচ্ছন্ন সমস্ত ক্যানভাস। শুধু হৃদয় বিদীর্ণ করা আবেগী কান্না বুকের পলল জমিনে ছিল বেদনার অশ্রুপাত; খুবই সামান্য ছিল তার চাওয়া- ব্রহ্মপুত্র পাড়ে জৈষ্ঠ্যের খররোদে গাছের ছায়ায় নিরিবিলি বসে থাকা, পলিভরা টলমল জল গায়ে মাখা! জানি, এ খুব বড় কিছু চাওয়া নয়- হাজার নদী ঘেরা দেশে; যেখানে তিস্তা, ধরলা, সোমেশ্বরী, ম্রিয়মান লৌহজং ছুঁয়ে নীল জল মেঘনার বুকে হাহাকার তোলে। তবু হলো না তার সেই আকাঙ্ক্ষার যবনিকা পতন; চারিদিকে কেবল নীল জল সমুদ্র অসহায় ক্রন্দন। প্রিয় বাংলাদেশ সুখে নেই, কবিতা ছেড়ে গেছে আমায়।। করোনাকাল এবং তোমার প্রিয়মুখ দেখো, পৃথিবীর তাবৎ মানুষের মাঝে - প্রচণ্ড রকম বাঁচার আকুতি; জীবন এখানে মূল্যবান অনেক। কিন্তু কেন? তা কি- তোমার আমার আমাদের মধ্যে যে অপূর্ণ প্রেম তার পূর্ণতা দেয়ার জন্য; নাকি ভালোবাসাহীন সংসারে জন্ম নেয়া শিশুর ভবিষ্যৎ সুখ স্বাচ্ছন্দ নিশ্চিত করে যাবার জন্য; নাকি জন্মাবধি ভেতর সত্ত্বায় লালিত স্বপ্ন পূরণের জন্য? এই অতিমারী অবলম্বনহীন করোনার সময়ে কেহ যদি ফুসফুসের অক্ষমতাজনিত কারণে সামান্য কৃত্রিম অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়- তবে কি তার- সবই নিশ্চিত ব্যর্থ হয়ে যাবে? আর যদি সব ব্যর্থ হয়েই যায়- তাহলে কি তার অশরীরি আত্মা চিতার গনগনে আগুনে পুড়ে কষ্ট পাবে অনন্তকাল? এই যে বললাম অশরীরি আত্মা- তা আসলে কী, কী-ই বা তার স্বরূপ; প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তিতে কী হয় তার অনুভূতি? দমহীন ঘড়ির মতো জীবন থেমে গেলে দেখো, আত্মাহীন অসাড় শরীর- কত দ্রুত চলে যায় পোকার দখলে; অথচ মিহি কালো শাড়ীর আঁচলে ঢাকা তোমার প্রিয়মুখ আমার কত না আপন! লেখক: কবি ও শিক্ষক, ময়মনসিংহ।
দুটি কবিতায় ভালো লাগলো।