ছবি: শেখ সুজন আলী
নির্মোহ এক অনিকেত সময় পাড়ি দিতে পারিনি
আমার অস্তিত্ব জুড়ে থেকে গেছে
আবাদী মাটির ধূলিকণা।
ধুলোমাখা দেহে ফুঁসে উঠেছে প্রতিবাদের বীজ
যেমনি করে ফনির কোঠরে উৎপাত হলে
জেগে ওঠে ফনা।
আমার অস্তিত্ব সজাগ হয়
শরীর এলিয়ে দিয়ে
হাতে তুলতে পারিনি জপের মালা
কিংবা ভগবানের হাতে নিজেকে সপে দিয়ে
ভাবতে পারিনি, ‘যা হচ্ছে ভালোই হচ্ছে…।’
আমি ছাগবালক নই
তাই ভগবানের সামনে বলির মঞ্চে
বাড়িয়ে দিতে পারিনি গলা।
এই যে দেখো কাদামাটি এখানে আমার ঘর
এইখানে জমির আইলে বসে
মিঠে বাতাসে কোনো এক যুবক
গেয়েছিল অষ্টকের গান।
বেরসিক খরায় দগ্ধ হতে হতে সজীব হয়েছে সে
তবু গলার সুর তার হয়নি ম্লান।
আমি এখন জন্মভিটেয় বসে থাকি
ধরে নিয়ে বুকের কাছাকাছি;
উপড়ে ফেলা ঘরের উলখড়—
ওতের চটা, কাঠের খুঁটি আর
মহোৎসবের শিঙ্গা।
আমার এখন ঘর নেই।
বসতির সন্ধানে চলে গেছে সব পড়শী
কেবল আমি এক দুঃসহ স্মৃতিভুক হয়ে
পূর্বপুরুষের জন্মভিটেয় বসে আছি বেশ।
কি জানি কোথায় চলে গেছে পড়শীরা
ধ্বংসস্তুপ হতে খুঁটে নিয়ে
সভ্যতার অশেষ, আর এক তালের ডোঙ্গা।
অপেক্ষায় আছি
সেই মাহেন্দ্রক্ষণের
পরশুরামের কুঠার নিয়ে বাজিয়ে দিতে
আমারই হাতে ধরা মহোৎসবের শিঙ্গা।