আর্টওয়ার্ক: নগরবাসী বর্মন
গতরাত খুব কষ্ট ছিল মনে গতরাত খুব কষ্ট ছিল মনে- দাউদাউ আগুনে পোড়া দগদগে কষ্ট। আজ অবশ্য বিকেলের ভারী বর্ষণে খানিক কমেছে তা। বৃষ্টি তো আকাশের কান্নার জল- ঝরে অবিরল; আকাশ বেদনার্ত হলে বজ্রনাদ চিৎকারে কান্না করে। ভালোবাসার নদীকে পাবার জন্য অপ্রাপ্তির সীমাহীন বেদনাবোধে চাতক পাখির মতো- মরুভূমির তৃষ্ণা বুকে নিয়ে যুগ যুগ ধরে ঘুমহীন সে; মিলনের তীব্র বাসনায় অস্থির অপেক্ষারত। আকাশের বুকফাটা কান্নায় নদী মানবিক হয়- পাথুরে হৃদয় খুলে পেতে দেয় বুকের আঁচল অপার মমতায় তুলে নেয় দয়িতের আঁখিজল; নির্বাক চেয়ে থাকে আকাশের দিকে সাগরের আহবানে দুরন্ত ছুটে চলে দিগ-দিগন্ত পানে; যেখানে এক সূতোয় নীলজল আকাশ মিশে আছে অতৃপ্তির সীমাহীন বেদনা ভুলে।। স্মৃতি অমলিন বছর কুড়ি কিংবা তারও আগে- এ শহর ঘেঁষেই এক প্রাণবন্ত নদী ছিল; ছিল বুকের উপর গাঙচিল মাছরাঙার ওড়াওড়ি; তারপর ভীষণ খরায় জলের অভাবে- শুকিয়ে শুকিয়ে মরে যায় সে নদী। আজ আবারও বছর কুড়ি পরে- মরে যাওয়া সেই শ্রোতহীনা নদী শ্রাবণ বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। ক্ষীণকায় শরীরে উচ্চাশার জল জমে জমে পূর্ণ যৌবনা, স্রোতস্বিনী চপলা; দু'তীর প্লাবি যেন এক ষোড়শী নারী- কান পেতে শুনে দয়িতের আহ্বান; বারংবার কেঁপে ওঠে শরীর- ভয়হীন দ্বিধাহীন ছুটে চলে অনিকেত; ক্রমে সরে যায় বুকে জমা পলি; জেগে ওঠে হঠাৎ সোনালি দিন- হিরন্ময় রোদ; মনে পড়ে সব স্মৃতি অমলিন।