মুঈন হুদা’র দুটি কবিতা

0

আর্টওয়ার্ক: নগরবাসী বর্মন

গতরাত খুব কষ্ট ছিল মনে

গতরাত খুব কষ্ট ছিল মনে-
দাউদাউ আগুনে পোড়া দগদগে কষ্ট।
আজ অবশ্য বিকেলের ভারী বর্ষণে খানিক কমেছে তা।
বৃষ্টি তো আকাশের কান্নার জল- ঝরে অবিরল;
আকাশ বেদনার্ত হলে বজ্রনাদ চিৎকারে কান্না করে।

ভালোবাসার নদীকে পাবার জন্য
অপ্রাপ্তির সীমাহীন বেদনাবোধে চাতক পাখির মতো-
মরুভূমির তৃষ্ণা বুকে নিয়ে যুগ যুগ ধরে ঘুমহীন সে;
মিলনের তীব্র বাসনায় অস্থির অপেক্ষারত।

আকাশের বুকফাটা কান্নায় নদী মানবিক হয়-
পাথুরে হৃদয় খুলে পেতে দেয় বুকের আঁচল
অপার মমতায় তুলে নেয় দয়িতের আঁখিজল;
নির্বাক চেয়ে থাকে আকাশের দিকে
সাগরের আহবানে দুরন্ত ছুটে চলে দিগ-দিগন্ত পানে;
যেখানে এক সূতোয় নীলজল আকাশ মিশে আছে
অতৃপ্তির সীমাহীন বেদনা ভুলে।।

স্মৃতি অমলিন 

বছর কুড়ি কিংবা তারও আগে-
এ শহর ঘেঁষেই এক প্রাণবন্ত নদী ছিল;
ছিল বুকের উপর গাঙচিল মাছরাঙার ওড়াওড়ি;
তারপর ভীষণ খরায় জলের অভাবে-
শুকিয়ে শুকিয়ে মরে যায় সে নদী।

আজ আবারও বছর কুড়ি পরে-
মরে যাওয়া সেই শ্রোতহীনা নদী
শ্রাবণ বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। 
ক্ষীণকায় শরীরে উচ্চাশার জল জমে জমে
পূর্ণ যৌবনা, স্রোতস্বিনী চপলা;
দু'তীর প্লাবি যেন এক ষোড়শী নারী-
কান পেতে শুনে দয়িতের আহ্বান;
বারংবার কেঁপে ওঠে শরীর-
ভয়হীন দ্বিধাহীন ছুটে চলে অনিকেত;
ক্রমে সরে যায় বুকে জমা পলি;
জেগে ওঠে হঠাৎ সোনালি দিন- 
হিরন্ময় রোদ; মনে পড়ে সব স্মৃতি অমলিন।

মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম দিন